সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:২৬ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

শীতের শুরুতে করোনা ঢেউ, সতর্ক না থাকলে বিপদ

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

চলতি মাসের শুরুর দিন থেকেই করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। শীতের আগমণ নাকি স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনীহা? করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কেন বাড়ছে তা নিয়ে বিভ্রান্তিতে আছেন বিশেষজ্ঞরাও। এর মধ্যে আবার ইউরোপে আবার হু হু করে বাড়ছে রোগী। দ্বিতীয় ঢেউ কি তবে এসেই গেল?

১ নভেম্বরে রোগী শনাক্ত হয় এক হাজার ৫৬৮ জন, ২ নভেম্বর এক হাজার ৭৩৬ জন, ৩ নভেম্বর এক হাজার ৬৫৯ জন, ৪ নভেম্বর এক হাজার ৫১৭ জন আর ৫ নভেম্বর এক হাজার ৮৪২ জন। এ তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

গত ৫৬ দিনের মধ্যে একদিনে শনাক্ত হওয়া রোগীর মধ্যে এটি সর্বোচ্চ। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ১০ শতাংশ এবং এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৩০ শতাংশ।

এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর শনাক্ত হন এক হাজার ৮৯২ জন। আর দেশে এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছেন গত ২ জুলাই চার হাজার ১৯ জন।

৮ মার্চ প্রথম তিনজন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে জানায় রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। শুরুর দিকে করোনার সংক্রমণ কমের দিকে থাকলেও মে’র মাঝামাঝি থেকে করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে থাকে। সে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই রোগী শনাক্তের হার চলে যায় ২০ শতাংশের ওপরে। চলতে থাকে আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। তবে তারপর থেকে শনাক্তের হার কমতে থাক। প্রায় এক মাসের বেশি সময় থেকেই শনাক্তের হার ১০ থেকে ১২ শতাংশের মধ্যে ছিল। তবে গত ২ নভেম্বর রোগী শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ৪৭ শতাংশে।গত ২৬ অক্টোবর দেশে করোনা রোগী শনাক্তের সংখ্যা চার লাখ ছাড়িয়েছে।

বর্তমানে রোগী শনাক্তের ৪৫তম সপ্তাহ চলছে। গত ১ নভেম্বর শনাক্তের ৪৪তম সপ্তাহে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, করোনা শনাক্তের ৪৩ তম সপ্তাহের চেয়ে ৪৪ তম সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষা, শনাক্ত ও সুস্থতার হার কমেছে, বেড়েছে মৃত্যুহার।

৪৩তম সপ্তাহে করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৯৪ হাজার ৭৮৪টি আর ৪৪তম সপ্তাহে পরীক্ষা হয়েছে ৮৯ হাজার ৭৭৬টি। আগের সপ্তাহের চেয়ে পরের সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষার হার পাঁচ দশমিক ২৮ শতাংশ কমেছে। ৪৩তম সপ্তাহে করোনাতে শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ২১২ জন আর ৪৪তম সপ্তাহে শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ১৭৭জন। এখানেও রোগী শনাক্তের হার আগের সপ্তাহের চেয়ে শূন্য দশমিক ৩৪ শতাংশ কমেছে।

অপরদিকে ৪৩তম সপ্তাহে সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ২৬৫ জন আর ৪৪তম সপ্তাহে সুস্থ হয়েছেন ১০ হাজার ৫৮২ জন। ৪৩তম সপ্তাহের চেয়ে ৪৪তম সপ্তাহে সুস্থতার হার কমেছে ছয় দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ।

একইসঙ্গে ৪৩ তম সপ্তাহে মারা গেছেন ১৩৪ জন আর ৪৪ তম সপ্তাহে মারা গেছেন ১৪৩ জন। ৪৩তম সপ্তাহের চেয়ে ৪৪তম সপ্তাহে মৃত্যু হার বেড়েছে ছয় দশমিক ৭২ শতাংশ।

গত ১১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা আবার বাড়তে পারে বলে মন্তব্য করে জানিয়েছেন, ‘এখনও করোনাভাইরাসের প্রভাব আছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে আরেকবার হয়তো এই করোনাভাইরাসের প্রভাব বা প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। কারণ ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে আবার নতুন করে দেখা দিচ্ছে। আমাদের এখন থেকেই সবাইকে সুরক্ষিত থাকতে হবে। আর এ আশঙ্কা সামনে রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসহ ২২টি মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভাগকে আগাম প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

করোনার প্রাদুর্ভাব আরও বাড়বে বলে মন্তব্য করে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরার্মশক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘কোভিড যুদ্ধ চলছে এবং চলবে। পৃথিবী থেকে কবে এই ভাইরাস বিদায় নেবে কেউ জানে না।’

ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘আমি যেহেতু জাতীয় পরামর্শক কমিটির সভাপতি, তাই আমাদের জানতে হয়, বিশ্বের কোথায় কী হচ্ছে। সেই হিসেবে আমাদের মনে রাখতে হবে, আমাদের যুদ্ধ সামনে আছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক দেশে ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ ঘোষণা করা হয়েছে জানিয়ে বলেন, ‘ইউরোপের অনেক দেশেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। অনেক দেশ ইতিমধ্যে দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার লকডাউন ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশেও আগামী শীতের সময় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে। তাই সবাইকে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।

কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, রোগী একটু বাড়তে শুরু করেছে। মাস্ক পরাসহ সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা বলেই যাচ্ছি। কিন্তু কেউ শোনে না। যার কারণে রোগী বাড়ছে।

চলতি মাসের শুরু থেকে রোগীর বাড়ছে শীতের কারণে নাকি মানুষের স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে জানতে চাইলে ডা. নজরুল বলেন, ‘এটা আরও সপ্তাহ দুয়েক না দেখলে বোঝা যাবে না।আগামী দুই সপ্তাহ এ গতিতে চলতে থাকলে আমরা বলতে পারবো বোধহয় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হচ্ছে।

মহামারী বিশেষজ্ঞ ও রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘এই মুহূর্তে সবাই রিলাক্স হয়ে গেছে, কেউ স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছে। এ কারণে সংক্রমণ বাড়ছে।’ চলতি সপ্তাহে রোগী সংক্রমণের হার ‘একটু বেড়েছে’ মন্তব্য করে ডা. মুশতাক বলেন, এটাকে এখনও ‘উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি’ বলা যায় না।সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION